Sunday, 12 July 2015

"শিশুর ডায়েরী"

Me On Facebook...


আম্মু যখন আমার আগমনের খবরটা আব্বুকে দিল ঠিক কয়েক মুহুর্তের জন্য চুপ হয়ে গেল আব্বু।
কিছুখন পর একটু রাগি সুরে আম্মুকে বলল,'আর কেউ কি জানে?'....'না কাউকে বলিনি এখন....
'বলার দরকার নেই আপাতত'.
শংকিত গলায় আম্মু বলল কেন?
আব্বুর নির্বিকার উত্তর....ওকে রাখা যাবেনা'
কথাটার অর্থ তখন বুঝিনি আমি...কিন্তু আম্মুর অনুভূতি গুলো বুঝতে পারছিলাম......
আম্মুর সঙ্গে আমার শরীর টাও ক্রমস অবশ হয়ে আসছিল.... আমি বুঝতে পারিনা আমি তাদের প্রথম সন্তান হওয়া সত্তেয় তারা এত চিন্তিত কেন?....আম্মু রাতে ঝগ্রা করে না খেয়ে ঘুমিয়ে পরে..
আমি আম্মুকে বোঝাতে পারিনা যে আম্মু না খেয়ে থাকলে কতটা কস্ট হয় আমার.. যন্ত্রনায় ছটফট করি সারারাত..
মা বলে ডাকতে ইচ্ছে করে...কিন্তু বলতে পারিনা...........
...আব্বুঃতুমি সহজ কথাটা বুঝতে পারছনা কেন?
আম্মুঃকোন কথাটা তুমি সহজ বোলছ?..
আমি আমার সন্তাণকে চাই,আর কিছু না..
আব্বুঃমতামত শুধু তোমার না।কারন সন্তানটা আমারও ।আর আমি যা করছি তা আমাদের ভালোর জন্য....
আব্বু চিৎকার করেই যাচ্ছে।শেষ পর্যন্ত আম্মু হার মানতে বাধ্য হল...
হ্যা....
আমি সব শুন্তে পাচ্ছি কিন্তু কিছু বলতে পারছিনা
......বোলব বা কিভাবে আমি তো এখন বোলতে শিখিনি....
আমার বয়স মাত্র তিন মাস..কথা বলতে শিখিনি সত্য,কিন্তু তাই বলে আমি এখন রক্ত পিন্ড নৈ...আমার হাত,পা,নাক,মুখ সবই আছে এখন...
আছে একটা ছোট্ট মনও........
আম্মুকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে....
সব মায়েরা ওটাতে যায় একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য আর আম্মু গেল একটি সুস্থ সন্তান কে হত্যা করার জন্য....
ওটার বাইরে আব্বু আমার মৃত্যুর
সুসংবাদের অপেক্ষায়...
খুব ভয় হছে আমার..লুকানোর জায়গা খুজে পাচ্ছিনা।পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গায়েও আমি নিরাপদ না....আজ আমি অনিরাপদ
কিছুখন কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না....
খুব ধারাল কিছু একটা দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করা হছে আমাকে..
সহ্য করতে পারছি না.
আব্বুর সেই
"রাখা যাবেনা"
কথাটার অর্থ যে কতটা কঠিন তা এখন বুঝতে পারছি আমি.............................. এটা কেমন জীবন যার জন্ম হয়ার আগেই মৃত্যু হল................

Friday, 10 July 2015

নীলা....!


আজ মৃদুল এর জন্মদিন।কিন্তু তাকে Wish করার মতো কেউ নেই।আজ সে একা বড়ই একা।।

.....একটা অচল ট্রেন এর বগিতে উঠে বসে আছে।।।আজ তার ভাবার মতো অনেক কিছু রয়েছে তাই হয়ত কিছু ভাবছে......হয়ত তার মূল্যহীন কাহিনী
প্রায় ৬ বৎসর আগের ঘটনা.....
....মৃদুল তখন দশম শ্রেনির ছাত্র....এই কদিন হলো নতুন ক্লাস। সামনে S.S.C তাই।।কোন এক কোচিং সেন্টারে ভর্তি হল সচরাচর সবার মত।।। ঠিক নিয়মিত কোচিংএ যেত পড়া শেষে চলে আসত এই পর্যন্ত কোন মেয়ের দিকে ফিরেও চায়নি।।।চাইবেই বা কেন বয়স আর কত হয়েছে।।।
তাছাড়াও মৃদুল খুবি শান্ত প্রকৃতির।।।কারো সাথে জরুরি ছারা কথা বলত না।।।।
ঠিক কিছু দিন পর একটি মেয়ে তারই মত সেখানে ভর্তি হল।।।কিন্তু এবারও বিপরীত হল না।।।।।মেয়েটাকে বেশি লক্ষ করলনা।।
এভাবে কিছু দিন গেল।।।
কিন্তু হঠাৎ একদিন বাসায় ফেরার সময়।।।পিছন থেকে মেয়েটার ডাক শুনল।।।তাকাতে ইতস্তত বোধ হলেও তাকাল।।।।
কিছু প্রয়োজনিয় বিষয় নিয়ে।।কিন্তু মৃদুল কাঁপা কাঁপা কন্ঠ নিয়ে কথা বলল
মৃদুল সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে নিলো।।।।।
মেয়েটার নাম জানার প্রয়জন বোধ করল না।।।।
।।।।

এভাবেই মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে কথা হত।।।
কিন্তু একসময় কখন যে মেয়েটি তার ভাল লেগে যায় তার খেয়াল নেই মৃদুল এর কিন্তু কিছু দিন পর সে সব বুঝতে পারল।।।
কিন্তু মৃদুল বয়স এর তাড়নায় প্রতারিত হতে চাইল না।।।সতর্ক হয়ে গেল।।।
কিন্তু কি করার এ মন মানে না।।।।শেষ পর্যন্ত সে মেয়েটির নাম জানার জন্য আকুল হয়ে উঠল।।
।।।
মেয়েটি আর মৃদুল একি এলাকায় থাকে।।।।।মনে মনে হাসে মৃদুল একি এলাকায় থাকে কিন্তু সামান্য নামটা জানে না।।।।।
একসময় সে মেয়েটির নাম জানতেও পারল.......
মেয়েটির নাম ছিল নীলা...
...
নীলাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করল মৃদুল।।।তার চোখ গুলো কেমন কথা গুলো কেমন।।।এসব নিয়ে মনে মনেই প্রসংশা করতে লাগল।।।।এই প্রথম সে কোন মেয়েকে নিয়ে এতটা ভাবছে
একসময় মৃদুল নীলাকে মনে জায়গা দিয়ে ফেলে।।।।
এতদিন পর Unsmart ছেলেটা কার জন্য Smart হওয়া শিখল।।।
এক সময় তারা কলেজে উঠল।।
।কলেজ ভিন্ন হলেও তারা একি কোচিং সেন্টার এ পড়াশুনা করত।।।
এদিকে মৃদুল এর বড় ভাই ছিল সে ওর ব্যপার টা জেনে ফেলে।।।কিন্তু ভাই বলে কথা তাই চুপ থাকে।।।এ নিয়ে মৃদুল এর বড় ভাই অর সাথে মজাও করে।।।
এদিকে মৃদুল এর বড় ভাই নীলা কে চেনে।।।
কিন্তু মৃদুল এর করুন অবস্থা সে নীলা কে তার মনের কথা বলার জন্য অনেক চেস্টা করত।।।।কিন্তু অসাহসী মন তার পারত না।।।
সে প্রতি দিন নীলার জন্য এক তোড়া গোলাপ ফুল নিয়ে যেত কিন্তু তাকে দিতে পারত না।।
আজ নয়ত কাল এভাবে দিন পার হতে থাকল কিন্তু তার মনের কথা আর বলা হত না।
।।কিন্তু পরিনতি....একসময় নীলা।।ওই কোচিং সেন্টার থেকে চলে যায়।।।
নীলার বাসা চেনার পরও ওর সাহস হতো না।।
কিন্তু এক সময় নীলার পরিবার সে বাসা ছেড়ে চলে যায় অন্যত্র।।
কিন্তু মৃদুল এর মনের কথা আর বলা হয়ে উঠে না।
।।।ও পাগল এর মত নীলা কে খুজে।
।।।।

কিন্তু মৃদুল বুঝতে পারে আর না।।।।।।
তাই ভার্সিটিতে ওঠার আগেই মৃদুল লন্ডন চলে যায় পড়ালেখার নামে কিন্ত ওর মনের খবর ও ভাল জানে।।
প্রচন্ড ভালবাসত ও নীলাকে তাই হয়ত কস্ট ভোলার জন্য.............
আজ ৩ বৎসর পর মৃদুল দেশে ফিরছে।।।তার বড় ভাই এর Marrage বলে কথা।আসতে তো হবেই।।।
সবাই খুশি।।।
বলতে গেলে খুব বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছে মৃদুল কে।।। তাই তার মনটাও ভাল নেই।।।।
এদিকে তার বড় ভাই তার হবু স্ত্রীর ছবি মৃদুল কে দেখানোর জন্য উঠে পরে লেগেছে।।
কিন্তু মৃদুল এর তাতে আগ্রহ নেই।
...রাত প্রায় ৮টা বাজে।।।।মৃদুল তাদের বাড়ীর বারান্দায় বসে আছে।।।।কিছু ভাবছে......
হঠাৎ তার ভাই কোথা থেকে এসে তাকে ধরে বলল.....
এই চল তোকে ওর ছবি দেখাব।।।
প্রায় বিরক্ত হয়ে মৃদুল বলল কার ছবি?আমি কারো ছবি দেখব না।।।।
কিন্তু ওর। ভাইও নাচ্ছর মৃদুল কে টেনে নিয়ে গেল ঘরে।।।কয়েকটা ছবি বের করে ওকে দিল বলল দেখ নীলার চেয়ে আরো বেশি সুন্দর....
মৃদুল রেগে গিয়ে ছবি গুলো টেবিল এর উপর রেখে দিল
।।।।তার ভাই তাকে ছবি দেখতে বলে।।।অন্য রুমে কাজে চলে গেল.....
খুবি বিরক্ত লাগছে মৃদুল এর।।।।
সে ওই ঘরেই বসে আছে
।।।।।।।তার রাগ টা আরেকটু বেড়ে গেল কারণ তার ভাই বলল এই ছবির মেয়েটা নাকি নীলার থেকেও বেশি সুন্দর।।।।।।
পুরনো স্রিতিতে ফিরে গেল মৃদুল।।।।
...সেই নীলার স্রিতিতে।।।

তাই নীলার সৌন্দর্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রায় রেগেই ছবি গুলো হাতে নিলো মৃদুল.......
তার মধ্যে একটি ছবি নিয়ে।।।
আস্তে আস্তে ছবি টা উল্টালো মৃদুল.......
ছবি টা দেখা মাত্রই যেন মৃদুল এর বুকে পুরো আকাশ টা ভেঙে পড়ল।।।।।
একি এত নীলার ছবি.....এটা কি করে সম্ভব.
কিছুখনের জন্য মৃদুল ওর চোখকে বিস্বাস করতে পারছিল না.........
কস্টে যেন বুঁকটা ফেঁটে যাচ্ছিল।।।।।
এর পর আর এক মুহুর্তও মৃদুল বাড়ীতে থাকেনি।।।।।।
সোজা বেরিয়ে পরেছে রাস্তায়.
সব কিছু যেন সপ্ন মনে হচ্ছে।।।কি হল এটা......
এটাই কি হওয়ার ছিল।।।।নিজেকে এ অবস্থায় দেখে ওর করুণা হচ্ছে।।।..
গত কাল রাত থেকে ও বাসায় নেই।।।।
ও জানেও না কেউ চিন্তা করছে কিনা ওর জন্য।।।।

খুব ভাল একটি উপহার পেয়েছে ও ওর জন্মদিনে......

আজ ওর কার প্রতি কোন রাগ নেই।।।।।কিন্রু রাগ হচ্ছে ওর নিজের প্রতি।।।।
হয়ত এটাই শেষ ছিল.......
আজ হয়ত মৃদুল এর ভালবাসা অসমাপ্ত থেকে গেল কিন্তু মৃদুল এর জায়গায় একটি বার হলেও নিজেকে উপলব্ধি করবেন।।।।
কারণ মনকে জোরা লাগানো যায় না।।।।।
এসব গল্পের কল্পনাতেই জায়গা হওয়া উচিত বাস্তবে নয়..........

Wednesday, 8 July 2015

রম্যগল্পঃ সেলফি যুগ

বৃষ্টি তেড়ে আসাতে দৌড়াতে গিয়ে পাদুকার তলা ছিড়ে গেছে মুকুলের, এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল আর তা ফেসবুক/টুইটার/ ইনস্টাগ্রামে একটা সেলফি দিবে না এমন পিছু হটার পাত্র সে নয়, অসম্ভবকে সম্ভব করার দূরন্ত সাহস নিয়ে মাটিতে বসে ক্লিক ক্লিক সেলফি, ঘটনা স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু একি!! সেলফিতে পাদুকার বাটা সিল কোথায় গেল? বন্ধু মহলতো ভাববে, ইহা বাটা না ফাটা কোম্পানির পাদুকা, অরেকটা সেলফি তুলতেই হবে, দুষ্টু বাটা কোম্পানি, এহেন কোম্পানির পায়ের তলায় লেগো থাকবে তা মানা যায় না!! মাঝে মাঝে পাদুকার তলা ক্ষয়ে গেলে বন্ধু মহলকে বিশ্বাস করাতেই কষ্ট হয়, ইহা বাটা না ফাটা জুতো!! শিট!! . পাদুকা জোড়া বোগল তলে নিয়ে বাসার দিকে হাটা শুরু করলো, সে কি মধুর স্মৃতি!! পাদুকা জোড়া কিনার সময়, স্যার স্যার করে কত সুন্দর করে পা'য়ে পড়িয়ে দিচ্ছিল দোকানদার ছেলেটি, সেই সমধুর স্যার ডাকের কথা মনে পড়ে নস্টালজিয়া ভর করলো তার মনে, মাথার উপর টুপটাপ বৃষ্টি মাটি স্পর্শ করছে, কেমন হবে ছবিটি শেয়ার দিলে!? কেউ হয়ত কমেন্ট করে বসবে, 'বল বীর, বল উন্নত মমশীর, এহেন ছবির জন্য বারে বারে পাদুকা ছিড়!! . বাসায় এসে তোড়জোড়, এক্ষুনি সেলফি আপডেট দিতেই হবে, কিন্তু সময় টু পি.এম, এ সময় ছবি দিলে লাইক কম আসে, সবাই খেতে বসে, একটার দিকে খাওয়া খেলে মানুষের কি এমন ক্ষতি হয়!! এ জন্য সবার গেসট্রিক, ধ্যাত! সময় যেন কাটে না! . টিক টিক করে সময় আড়াইটা, মোবাইল হাতে নিল মুকুল সাহেব! একি কান্ড!! মোবাইল ওপেন হচ্ছে না কেন?! সামসাং কেন যে পানি রোধক এন্ড্রোয়েট বানায় না! শালার সেলফি! ব্যাটারি পার্ট খুলে বাত্তির আলোর নিচে মোবাইল আলোকিত করতে দিল, অতীতে ও বৃষ্টিতে সেলফি তুলতে গিয়ে এমন দু একবার হয়েছে, কিছুক্ষণ পর অন হবে, ভাবতে লাগলো শাহদাতের মোবাইল Zটু এর কথা, ওয়াটার রেসিসটেন্ট, সানি আপা(সনি) মডেলি ভালা, সামু ভাই(সামসাং) দুষ্ট!! . মোবাইল অন করল, বাটা লেগো কাদা মেখে ঝাটা'র মত লাগছে, এডিট সফট ক্লিক করল, কনট্রেস্ট ব্রাইটনেস সব কিছু ট্রাই করল, কোন রকমেই বাটা মনে হচ্ছে না, ধ্যাত!! রবি ঠাকুর বলেছিলেন, একদা ছিল না জুতা, চরণ যুগলে..সে সময় ই ভালো ছিল! ধুত্তরি! অবশেষে সেলফি আপডেট দিল, নিচে টাইটেল, "সদ্য ক্রয় করা 'বাটা' জুতোর 'ফাটা' অবস্থা ৷"